মনে পড়ে শৈশব, সেই পুকুরে এমন বৃষ্টির দিনে ঝাপ দিয়ে সাতার কাটা। কর্দমাক্ত পায়ে হেটে হেটে বহুদূর ছুটে যাওয়া। এমন দিনে শুধু এসবই মনে পড়ছে আমার। অবিরাম ব্যস্ততা, ভাবনা-চিন্তার মাঝেও আমি অনুভব করছি এমন একটা মায়াবী আবহাওয়া।জীবনের কত কালবেলা পেরিয়ে এসেছি যৌবনে। অফুরন্ত আবেগ, নিবিড় মলিনতা, মৌন মুখরতা, নিস্তব্দ কোলাহল সব ছাড়িয়ে আমি অনুভব করি সেই কোমল স্পর্শ, মায়ের বুলি। শুধুই অনুভব করি মায়ের সেই গালভরা ডাক। কিন্তু জানি আমি সেটাও পাবোনা। সেই মা’ আমার আজ আমাকে ডাকতে পারেনা। শুধুই নির্বাক তাকিয়ে থাকে।
আজকের এই শীতল আবহাওয়ায় মনে পড়ে আমার সাহিত্য নিয়ে কত পারদর্শীতা। ঝিরি ঝিরি বৃষ্টিতে বসে থাকা, গুন গুন করে গান গাওয়া। আমি জানি, সব আছে, সব থাকবে কিন্তু সেইদিন আর আজকের মধ্যে অনেক বড় ব্যবধান। এখন আর ছেলেমানুষী করতে পারিনা। কেউ আমার কাছে জবাবদিহিতা চায়না। এমনকি কেউ জানেওনা যে, আমি কি করছি, কোথায় যাচ্ছি। এই অবাধ স্বাধীনতা আমাকে একাকীত্বকে ভাবতে শেখায়। আসলেই কি একা আমি? আজকের এই রোমাঞ্চকর অনুভূতি শুধু আমার? আমি মানতে পারিনা, ভাবতেও পারিনা, বলতেও পারিনা। যখন শরীর আমার রিমঝিম বৃষ্টিতে ভিজে যায়, অনুভব করি অনমনীয় কোন দূত আমাকে ছুয়ে দিচ্ছে, বার্তা শোনায় শান্তির, পরশ বুলায় আমার শরীরে। ভাবিনা, ভাবতেও পারছিনা। বেশি ভাবিনা কারণ, আমাকে নির্মমতর সর্বোচ্চ আইনে আমাকে দন্ডীত করা হয়েছে। বোঝা বয়ে বেড়াবো হয়ত আজীবন।
বৃষ্টির এই সন্ধ্যায় সবার ‘সুন্দর জীবন’ কামনা করি। ভালো থেকো, দোয়া করো। আমার অনুভূতিগুলো যেন বেচে থাকে আমার ডায়েরীর পাতায়।